ডেস্ক নিউজ : বাংলাদেশে পোশাক শিল্প শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির জন্য নতুন মজুরি বোর্ড গঠন করেছে সরকার। রোববার সচিবালয়ে এক বৈঠক শেষে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মজিবুল হক চুন্নু এ খবর দিয়েছেন।
তিনি বলেন, “তৈরি পোশাক শিল্প শ্রমিকদের জন্যে সরকার মজুরি বোর্ড ঘোষণা করেছে। এই বোর্ড আগামী ৬ মাসের মধ্যে শ্রমিকদের বেতন নির্ধারণ করে সুপারিশ করবে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করে তা ঘোষণা করা হবে।”
পোশাক শিল্প শ্রমিকদের জন্য নতুন মজুরি বোর্ড গঠনকে সরকারের ইতিবাচক পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করলেও টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি আবুল হোসাইন রেডিও তেহরানকে বলেছেন, এ বোর্ড গঠনে শ্রমিকদের মতামত নেয়া হয় নি। এটি গণতান্ত্রিক হয় নি। কারণ, মজুরী বোর্ড গঠনের ব্যাপারে বলা আছে শ্রমিক নেতাদের মধ্য থেকে যিনি সবচেয়ে বেশি শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্ব করেন, এরকম একজনকে মজুরী বোর্ডে নিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু বলেন, সরকার তাদের পছন্দমত দলীয় লোকদের নিয়ে মজুরি বোর্ড গঠন করে এটিকে দলীয়করণ করেছে।
মিশু মনে করেন, বর্তমান বাজার দরের সাথে সংগতি রেখে শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি হতে হবে সব মিলিয়ে ১৬ হাজার টাকা।
মিশু আরো উল্লেখ করেন, এ সরকার নির্বাচনের বছরকে মাথায় রেখে এ মজুরি বোর্ড গঠনের ঘোষণা দিয়েছে, তবে নিম্নতম মজুরি বাস্তবায়নের কাজটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে করতে হবে।
তবে, সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি নাজমা আখতার বলেছেন, মজুরি কমিশনের গঠন বা শ্রমিক প্রতিনিধি বিষয়ে বিতর্ক করার চেয়ে তারা কীভাবে দ্রততম সময়ের মধ্যে ১৬ হাজার টাকা নিম্নতম মজুরি নির্ধারণ করতে পারে এবং সেটা দ্রুত কার্যকর করতে পারে সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকা দরকার।
শ্রম প্রতিমন্ত্রী আগেই বলেছেন, মজুরি কমিশনের স্থায়ী সদস্যদের মধ্যে থাকবেন চেয়ারম্যান, সাবেক জেলা জজ সৈয়দ আমিনুল ইসলাম, মালিক পক্ষের প্রতিনিধি কাজী সাইফুদ্দীন আহমদ, শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধি জাতীয় শ্রমিক লীগের কার্যকরী সভাপতি ফজলুল হক মন্টু। এ ছাড়া, কমিটির নিরপেক্ষ সদস্য থাকবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন।
এ ছাড়াও মালিকপক্ষের প্রতিনিধি থাকবেন বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান এবং শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে থাকবেন জাতীয় শ্রমিক লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার ভূঁইয়া।
এর আগে ২০১৩ সালে সর্বশেষ পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করে সরকার। সে সময় পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করা হয়েছিল ৫ হাজার ৩০০ টাকা। শ্রম আইন অনুযায়ী ৫ বছর পর শ্রমিকদের নতুন মজুরি কাঠামো গঠনের বাধ্যবাদকতা রয়েছে। (পার্সটুডে)